ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহতের পর হামাসের নেতৃত্বে কে আসছেন?
- By Jamini Roy --
- 19 October, 2024
ইসরায়েলের এক বছরের দীর্ঘ পরিকল্পনার পর হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার মিশন সফল হয়েছে। গত বুধবার ইসরায়েল এই খবর নিশ্চিত করে, যা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের জন্য বড় ধাক্কা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে সিনওয়ারকে অভিযুক্ত করা হয়।
ইসমাইল হানিয়া ও ইয়াহিয়া সিনওয়ারের পরপর মৃত্যুতে হামাসের নেতৃত্ব সংকটে পড়লেও সংগঠনটি তাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। সিনওয়ারের মৃত্যু নিশ্চিত করে হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় গতকাল এক বিবৃতিতে জানায়, শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু তাদের আন্দোলনের ইতি টানবে না, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তারা প্রেরণা হয়ে থাকবেন।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, সিনওয়ারের উত্তরসূরি কে হবেন? যদিও তিনি কোনো সুস্পষ্ট পরামর্শ দিয়ে যাননি, অনেকেই ধারণা করছেন, তাঁর ছোট ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার নতুন হামাসপ্রধান হতে পারেন। মোহাম্মদ হামাসের সামরিক শাখার একজন কট্টর নেতা এবং সম্প্রতি কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে ইসরায়েল ইতিমধ্যেই তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে, মুসা আবু মারজুকও সিনওয়ারের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী। হামাসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং এর রাজনৈতিক শাখার উপপ্রধান হিসেবে মারজুকের প্রভাব রয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তিনি হামাসে একটি শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছেন।
হামাসের আরেক সম্ভাব্য নেতা খালেদ মেশাল, যিনি সংগঠনের রাজনৈতিক শাখার সাবেক প্রধান। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপরিচিত এই নেতা হামাসের নেতৃত্ব নিতে পারেন। তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের বিরুদ্ধে অতীতে সুন্নি বিদ্রোহে সমর্থন দেওয়ায় ইরানের মতো সমর্থকদের মধ্যে কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে।
খলিল আল হায়া, সিনওয়ারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী, তিনিও হামাসের পরবর্তী প্রধান হতে পারেন। গাজার যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কায়রোয় মধ্যস্থতা করে তিনি সংগঠনের রাজনৈতিক শাখায় নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণ করেছেন। কাতার থেকে তিনি হামাসের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।
ইসরায়েল এর আগেও হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছে, কিন্তু প্রতিবারই সংগঠনটি নতুন নেতৃত্ব খুঁজে নিয়েছে এবং ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০০৪ সালে হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিন এবং তাঁর উত্তরসূরি আবদেল আজিজ রানতিজিকে হত্যা করেছিল ইসরায়েল।
ইয়াহিয়া সিনওয়ারের শাসনকালে হামাসের সাংগঠনিক কাঠামোয় অনেক পরিবর্তন এসেছে। তাঁর নেতৃত্বে সংগঠনটি গাজার সিদ্ধান্তপ্রণেতা হিসেবে একক নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। এখন এই শূন্যতায় হামাস কীভাবে পুনর্গঠিত হবে, তা ভবিষ্যতেই স্পষ্ট হবে।